আয়কর রিটার্ন দেওয়ার মৌসুম এলেই বিভিন্ন ফেইসবুক পেইজে ‘জিরো রিটার্ন’ দেওয়ার তরিকা দেওয়া হয়, সেজন্য অর্থও নেওয়া হয়। আবার পাড়ার ‘কম্পিউটারের দোকানে’ও সামান্য কিছু টাকা দিয়ে ‘জিরো রিটার্ন’ দেওয়ার ব্যবস্থা করে আসেন কেউ কেউ।
নিয়ম অনুযায়ী, আয়-ব্যয়-সম্পদ-দায় হিসাব করে যদি তা করযোগ্য না হয়, তবে তাকে বলে ‘জিরো রিটার্ন’। মানে কারো বার্ষিক আয় যদি সরকার ঘোষিত করযোগ্য আয়সীমার নিচে থাকে, তার কাছ থেকে সরকার আয়কর নেবে না। করদাতার ট্যাক্স ‘জিরো’, সরকারের কোনো ‘রিটার্ন’ নেই।
কিন্তু আয়কর ফরমের সবকটি ঘর ‘শূন্য’ দিয়ে পূরণ করে ‘জিরো রিটার্ন’ দাখিল করা যায়–এমন ‘ভ্রান্তিমূলক’ ফেইসবুক পোস্ট নজরে আসার কথা জানিয়েছে এনবিআর।
সংবাদ বিজ্ঞপতিতে বলা হয়েছে, “এ সকল ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে কোনো কোনো করদাতা তাদের আয়কর রিটার্নে আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের বিষয়ে অসত্য ঘোষণা প্রদান করে আসছেন বলে জানা যায়। এক বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর বলেছে, আয়কর আইনে ‘জিরো রিটার্ন’ বলে কিছু নেই। করদাতা মিথ্যা তথ্য দিলে ৫ বছর পর্যন্ত জেল খাটতে হতে পারে।
এনবিআর বলছে, “আয়কর আইন, ২০২৩ অনুসারে ‘জিরো রিটার্ন’ নামে কোনো প্রকার রিটার্ন দাখিলের বিধান নেই। আয়কর আইন অনুসারে একজন করদাতাকে তার প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় অবশ্যই সঠিকভাবে আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করতে হবে।
“করদাতার প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় প্রদর্শন না করে এর কোনো একটি শূন্য অথবা সবগুলো তথ্য শূন্য হিসেবে প্রদর্শন করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ। করদাতা কর্তৃক দাখিলকৃত আয়কর রিটার্নে তার আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় সম্পর্কিত সঠিক তথ্য প্রদর্শন না করে মিথ্যা বা অসত্য তথ্য প্রদান করলে আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৩১২ ও ৩১৩ অনুসারে করদাতাকে ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড প্রদানের বিধান রয়েছে।”
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করদাতার প্রকৃত আয়ের পরিমাণ আইন অনুযায়ী করযোগ্য না হলে তাকে কোনো কর পরিশোধ করতে হবে না।“তবে কর প্রদেয় না হলেও সঠিক তথ্য-উপাত্ত প্রদর্শন না করে শূন্য আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় দেখিয়ে শূন্য বা জিরো রিটার্ন দাখিল করার কোনো সুযোগ আয়কর আইনে নেই।”